নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়- এর কবিতাগুচ্ছ

3
490
পরিচিতিঃ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়- জন্ম ইং ১৯৫৪ সালে । সাহিত্যচর্চা জীবনের অনেক’টা সময় ধরে, বর্তমান ভাণ্ডারে কবিতা, অনুগল্প, গল্প ও একাধারে গীতিকার। লিখেছেন নানান লিটল ম্যাগাজিনে।কানা- চাকদহ, জেলা নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ ।

না রা য় ণ গ ঙ্গো পা ধ্যা য়- এর কবিতাগুচ্ছ

চাকরের অভিব্যক্তি

হুকুম আর প্রশ্নের ধারায়-
বয়ে যায় জীবন তরী।
যন্ত্রণাকে গল্প বলে-
বাঁচবার আকণ্ঠ প্রয়াস।
ইচ্ছে মতো হাঁক পাড়ে মনিব।
একটুও অবসর পাই না।
বিশ্রামের চোখে জল,
আমার দু-চোখ চঞ্চল।

সময়ের সঙ্গে

জীবনটা জু’ড়ে যেন একটাই প্রশ্ন, কী হলো ?
চারিদিকে শুধু প্রশ্ন, কী হলো ?
সারাদিন ঘুরে-ঘুরে পড়ি-কি-মরি করে-
ক্লান্ত দেহে ঘরে ফিরি ।
তখনি উত্তর, দিতে হয় সত্বর ।
মা, বাবা, ভাই-বোন দাঁড়িয়ে,
শুধু প্রশ্ন, কী হলো ?
সংক্ষেপে কথা-সেরে বিছানাটা নিই ঝেড়ে ।
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বসি ।
টেলিফোন বেজে ওঠে,
শুনি প্রেমিকার ঠোঁটে,
ছোট-ছোট প্রশ্ন, কী হলো ?

প্রশ্ন

মুখে বলো ভালোবাসি, ভালবেসেছো কি কখনো?
ব্যথার কথা মুখে বলো, ব্যথা সয়েছ কি কখনো?
পেয়েছ কি হারানোর বেদনা, গুনেছ কি প্রহরের ক্ষণ?
অনুভব করেছ কি যন্ত্রণা, কীভাবে কাটে সে জীবন?
হয়তো দেখেছ অমা-রজনী, সে আঁধারে চলেছ কি কখনো?
শুনেছ কি ক্ষুধার্তের কান্না, হাহাকার করে দীন প্রতিদিন?
হয়তো গল্পে তুমি পড়েছ, সে জ্বালায় জ্বলেছ কি কখনো?

আত্মদর্শণ

আমি দাঁড়িয়ে কেন এখানে ?
পড়শির বিপদ, আমি যাচ্ছি না তো ?
তবে কি পা দুটো অবশ ?
আমার পাশের বাড়ি আগুন জ্বলছে ।
অথচ আমি স্থির ?
ওরা নিশ্চয় চীৎকার করে ডাকছে ।
শুনতে পাচ্ছি না তো ?
আমি কি বধির ?
দৈন্য পীড়িত মানুষের এত যন্ত্রণা,
আমার উপলব্ধি শূন্য ।
তবে কি আমি প্রকৃতি সিদ্ধ নই ?
কোনো মানুষের মুখ দেখতে পাচ্ছিনা কেন ?
আমি কি অন্ধ হয়েগেছি ?
কিন্ত, আমি তো বিকালঙ্গ নই ?
কি ভাবে হলাম সার্বিক প্রতিবন্ধী ?

সময় স’রে যাচ্ছে

শুরুর সময়টা স’রে যাচ্ছে,
একটু-একটু ক’রে ।
সময়ের মধ্য-ভাগে আসতে
আর মাত্র কয়েকটা বছর ।
স্বপ্নের তুলনায়, সময়টা অনেক কম ।
তারপর, শেষের পথ শুরু,
শেষটা শেষ ।
এখনো ছুঁতে পারিনি তোমার আবেগ,
তোমার উচ্ছ্বাস ।
অবাক হবার কিছু নেই,
হয়তো তুমিও ভাবছো এমনটাই-
আমিও মানুষ, তুমিও মানুষ ।
ভাবনার জায়গা তো একটা’ই ।

এখনো সে আসেনি

এখনো সে আসেনি ;
যে-বলবে ভালোই তো লেখেন, কবিতা-গল্প ।
এখানেই শেষ নয়, আরও অনেক কথা ।

এখনো সে আসেনি;
যার সঙ্গে খোলা মনে, খোলা পায়ে, হবে পথ চলা।
যার শেষ নেই-

এখনো সে আসেনি;
যাকে দেখতে চাই, দিনের আলোয়-
যাকে দেখতে চাই, চাঁদের আলোয়-
যাকে দেখতে চাই, জোনাকির আলোয় ।

আমায় দাও

ব্যর্থ জীবনের কবিতা নিয়ে বেঁচে আছি,
তোমার সাফল্যের পরশ আমায় দাও;
আমি সীমার মধ্যে অসীমকে দেখতে পাবো।
তোমার আনন্দ উদ্দীপনায়, আমায় অংশীদার করো,
যাতে আমার প্রাণ বায়ু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে।
তোমার ভালোবাসার দুটি হাত আমার হাতে রাখো।
আমি যেন ভাবতে পারি, পৃথিবী তুমি কত সুন্দর।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here