শি উ লি   পা র ভী ন -র কবিতাগুচ্ছ 

2
179
পরিচিতিঃ  শিউলি পারভীন। বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর।(স্বর্ণপদক প্রাপ্ত, পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়)। বর্তমানে শিক্ষিকা পদে কর্মরত ( বাংলা বিভাগ) পাবলিক স্কুল।প্রথম লেখা প্রকাশ ‘ ‘শব্দমানবী’ লিটল ম‍্যাগাজিনে। এছাড়াও ‘শব্দলেখা’ ই-বুক পত্রিকায়, ‘অর্বাচীন’ অয়েব ম‍্যাগাজিন, ‘গানের কথা’ লিটল ম্যাগাজিন এ ইতিপূর্বে লেখা প্রকাশিত হয়েছে। শখ বই পড়া ও গান শোনা। বাইফোকালিজম্-এ রইল আজ তাঁরই একগোছা কবিতা।

শি উ লি   পা র ভী ন র কবিতাগুচ্ছ 

অধরা

কেমন যেন রঙিন বুদবুদের মতো তুমি
হাত ফসকে যাও
কেমন তুমি কাছে এলেও দেখা যায় না
যেন চোখ আর চোখের পাতার মতো।
কেমন যেন ছুঁয়ে যাও অথচ স্পর্শ পাইনা
যেন বয়ে যাওয়া হাওয়ার মতো।
কেমন তুমি চোদ্দো বছরে স্বপ্নে আসা
স্বপ্নের মতো অধরা হয়ে থাকো।

অভিমান

আমায় আর বকো না অমন করে
হারিয়ে যাবো রাত্রি অন্ধকারে যখন,
চোখে তোমার অশ্রু যাবে ভরে।

আমাকে আর বকো না অমন তুমি
একটু খানি সময় দিও সময় নিয়ে,
শিশিরবিন্দুর মতোই কিন্তু আমি।

আমাকে আর রেখো না অমন দুরে
নীল পাহাড়ে দিন চলে যায় দেখো,
একটু আগলে রাখো বুকের ঘরে।

আমাকে আর শুধু শুধু বকো না তুমি প্রিয়
নগ্ন হাত বাড়িয়ে আছি যুগ যুগ হতে
‘ইগো’ টা একটু দুরে ঠেলে দিও।

“সব ভুলে যাও, এবার এসো ঘরে”
আদর করে বলো এবার এইভাবেই,
অভিমানে জমানো যত মেঘ

পড়ুক যেন বৃষ্টি হয়ে ঝরে।

চিত্রঃ ২
ক্ষমা করো

 

শীতের পাতলা কুয়াশা চাদরের মতো
একটা নির্বুদ্ধিতার লজ্জা আচ্ছন্ন করছে
বোধ নামক সূক্ষ্ম  প্রকৃতির কাছে!

চেতনার কাঁপা জ্বরে  ভুল বকা হয়ে যায়,
মানুষের কাছে হাত বাড়ালেই  কি ভাবছো
সে হাত দিয়েই হাতটা ধরতে পারে?

বাইরের রাজনীতি কে খুব নোংরা বলে সবাই
কিন্তু নিজের বুকের ভেতর সযত্নে পালন করে
এক একটা পোষা রাজনৈতিক শ্বাপদ।

আমি ‘তোমার’ কাছে কেবল নিরব আর্জি জানাবো
না! তাই লিখে রাখি অযত্নের ছেঁড়া কাগজে
ভয়ঙ্কর রূপের গোপন ইতিহাস।

তুমিও অকারনেই যেন ক্ষত হয়েছো
শীতের কুয়াশার মতো একটা গাঢ় লজ্জা
আমাকে ঢেকে দিচ্ছে অনবরত

কখনো নিরপরাধ হয়েও নত হওয়া ভালো
তোমার শিক্ষা কে আজ পাথেও করে নিলাম
‘ক্ষমা করো!

খুনি

প্রসব বেদনায় মুষড়ে পড়েছে মেয়েটি
ভেঙেচুরে আবার একটা নতুন সৃষ্টির সূচনা।

ঠাকুমা ভোরের নামাজে অনেক অনেক
দোয়াপাঠ করেছে আরবি উচ্চারণে, নাতি চায়
এবার;

রক্তের বাঁধ ভেঙে আবার এসেছে
ফুটফুটে চাঁদের মতো শিশু কন‍্যা।

ছুটি!  হাসপাতাল হতে ঘরে যেতে হবে,
হোঁচট লাগলো মেয়েটির বুকে!  একটা ব‍্যাথা।

ছেলেটি বলেছে,”আবার মেয়ে!
তোমাকে ঘরে নিয়ে যাওয়াটাই যেন বৃথা।”

এবারে ছুটি—–!

ঘরের চৌকাঠে মেয়েটির লাশ
রিপোর্টে বলেছে, হার্ট অ্যাটাক!

আমি বলি খুন হয়েছে মেয়েটির
হন্তারক স্বামীর জোবানে!

কি বলো তোমরা?
খুনি তো!

প্রেম ঈশ্বরের মতো

কখনো   যদি কারন খুঁজে না পাও
যদি স্পর্শকাতর তুলোট চিত্ত
অকারনেই মায়া করে যায় ক্রমশ কারো চোখের দৃষ্টি
যদি মাইলের পর মাইলকে
দূরত্ব মনে না হয়
যদি অন্ধকারে চুপ করে বসে বসে
ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক ভালো লাগে
যদি জোৎস্না রাতের রুপোলি আলোয়
কবিতা ভেসে আসে
যদি প্রখর দিনে কর্ম ফাঁকে ফাঁকে
জেগে ওঠে এক মায়াবী হাসি

যদি কারণ খুজে না পাও
কেন একটি নামকে তসবিহ জপ করছো?
তবে জেনে রেখো
প্রেম সেদিন নিরাকার ঈশ্বর হতেও পারে!

লেখা পাঠাতে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here