ন্যস্টালজিয়ায় ভেজা চিঠি ও একগোছা অণুকবিতা

1
246

 

এই চিঠি শুধু বাইফোকালিজমের ভালো লাগার প্রাপ্তি নয়। এই চিঠি এক অন্যরকম ন্যস্টালজিয়া বহন করছে বলেই আজ নিমাই বন্দোপাধ্যায়-র একগুচ্ছ অণুকবিতাসহ চিঠিটাও প্রকাশ করলাম।আশাকরি উনি আমায় ক্ষমা করবেন ওনার একান্ত ব্যক্তিগত বাইফোকালিজম্-কে লেখা চিঠিটা এই হাটে খুললাম বলে…

ন্যস্টালজিয়ায় ভেজা চিঠি ও একগোছা অণুকবিতা

প্রিয় বাইফোকালিজম্

যখন কলেজে পড়েছি, তখন প্রচুর ” অনুকবিতা “
লিখতাম। তিন লাইনের। হাইকু স্টাইলে। তবে
বাংলায়, ‘ নিয়ম মেনে ‘ হাইকু লেখা হয়নি আমার।
৫+৭+৫ মাত্রা’ র এ্যাতো মাতামাতি… লেখা বেশ
কঠিন।
তখন ছোট কবিতার বাজার ভাল ছিল। খবরের
কাগজের “কাগজ” দিয়ে ছেপে একটা পত্রিকা
বের করতাম বন্ধুরা। সেখানে অনেককে স্থান
দেওয়া যেত। ছাপার অক্ষরে নামটা দেখলে কে
না খুসি হয়?সেই থেকে অনুকবিতা শুরু…
ছাপাখানায় যেতাম রোজ। ওই শিল্পটাকে বোধহয়
ভালো লাগতো তখন। এখন তো সব স্মৃতি! দাস
বাবু হরফ সাজাত। মল্লিকবাবু ব্লক বাঁধত। ঘ্যাটাং
ঘ্যাট মেসিন চল্লেই প্রথম কপি পেয়ে যেতেন প্রুফ
রিডার, পিনাকি দা। গিলোটিন মেসিনে দিস্তা দিস্তা কাগজ কাটা হচ্ছে। দেখতাম। ভালো লাগত। তাই যেতাম। টুকটাক ফাইফরমাসও খেটেছি। বোর্ড
বাঁধাই, আটা আর তুঁতে মাটির হাঁড়িতে জ্বাল দিয়ে
আঁঠা বানানো… বই বাঁধানো… পত্রিকা……।
কম্পিউটার আইফোন টাচস্ক্রীন ফোন, ছাপার
জগতটাকেই পাল্টে দিয়েছে। বিপ্লব এনেছে। এখন সম্পাদক, প্রকাশকের সেই অর্থে খাটুনিই
নেই তেমন (তুমি যেন এই লাইনে এসে রাগ করোনা)।
আমার এর সাথে জুড়ে দেওয়া কবিতাগুলো
কোথাও দেওয়া হয়নি, আমারই কুঁড়েমিতে। তার
জন্য কোথাও কোনো ক্ষতি হবে না বাংলা ভাষার,
বা সাহিত্যের। এরা দু একটা গোল্লাছুট সেই সময়ের। দু একটা, এখনো লিখতে পারি কী না দেখি – বলে লিখলাম। আর ” একমুঠো বাইফোকালিজম্-কে দিলাম “। অনুকবিতা। বাইফোকালিজম্ ছাপতে পারলে তবেই ছাপা হোক। গাল পাড়লে তোমার খাতায়। সুখ্যাতি হলেও তোমার এ্যাকাউন্টেই জমা পড়বে।
আমার ছোট গল্প ” আয় তবে সহচরী ” র মুখবন্ধে
তুমি ঠিকই বলেছ, ” উনি মূলত কবি “। একদম
সত্যি। লেখা দেখে বোঝা যায় বোধহয়! হাত দেখে, মুখ দেখে যেমন অনেকে, অনেক কিছু বলে
দিতে পারে। রাগ করোনা। তাহলে ভেগে যাবো। অতএব ‘নো রাগারাগি, নো ভাগাভাগি ‘।
প্রাক পূজা পর্বের আন্তরিক অভিনন্দন এবং
সপ্রীতি শুভেচ্ছা রইল। সক্কলকে। ভালো থেকো বাইফোকালিজম্

ইতি
নিমাই বন্দোপাধ্যায়


★★★ একমুঠো অণুকবিতা ★★★

নি মা ই   ব ন্দো পা ধ্যা য়  

১)

দিন আনা দিন খাওয়া চটি, দরোজার
ওপাশেতে রয়, শীতের আয়ুতে বাঁচে জুতো
রোগ তার একটাই – ক্ষয়

২)

বিদ্যে? প্রাথমিক স্কুল
শৈশব? চোরাবালি পেটে
জন্মেছি সারাদিন স্বাধীনতা ঘেঁটে

৩)

কুকুরের কান্না আবেগ
মাস্কহীন পরিযায়ী লোক
রাজাহীন বেমানান এই রাজপথে

৫)

কিছু বলবি? বল না?
হরিনাম সংকীর্তন?
ছ ফুট দুর থেকে ভালো শোনা যাবে?

৬)

কেবলের তারে ছ’ টা কাক
ওখানেই জটলা ওদের। নিচেতেই স্বর্গের রথ
ফুলে ঢাকা তাজা এক করোনার দেহ

৭)

দোতলার ছাতেতে রেলিঙ, স্পার্ক
বিজলীর রূপচর্চা
পাঁচিলের কোটরে খোলস

৮)

আমডালে আটকেছে মাথা, সুপারির
চাঁদমামা মিটিমিটি হাসে
সূর্যকে আড়ালেতে রেখে,পাখিগুলো ঋতুমতী হয়

৯)

ভ্যানবালা পুরোহিত ঢাকি
ভগবান কাপড়ের ভাঁজে। বিলবই অনুদান সব
সাবানেতে হাত ধোও, মুখ ধোও আগে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here