বদ্রীনাথ পাল-এর গুচ্ছ-ছড়া

0
58
ছড়ার ছড়াছড়ি

                                                                                              ছবিঃ গৌতম মাহাতো

বদ্রীনাথ পাল-এর গুচ্ছ-ছড়া
                                                      
ছড়াকার।ছড়া আর ছন্দে তাঁর একান্ত যাপন ও তাতেই মুক্তির আস্বাদ খুঁজে নেন।ছোটদের ছড়া পত্রিকাগুলোতেই নিয়মিত লেখাজোখা,এবং ছোটদের জন্যই লেখেন।কিন্তু পাঠক সর্বস্তরের।

পিকনিক


ভূত গুলো সব বসিয়ে মিটিং করলো সবাই ঠিক,
করতে হবে এই পৌষে জম্পেশে পিকনিক।
মেনু হবে কোপ্তা কাবাব লুচি মাংসের ঝোল,
শেষ পায়েতে দ‌ই হবেনা, হবে শুধুই ঘোল।
রসগোল্লা মিহিদানা আর হবে চমচম,
ফাঁপর ভাজাও দেওয়া হবে, তবে একটু কম।
আইন যতই থাকুক, যদি হয়তো হবে জেল,
মাইক কিন্তু বেজেই যাবে এক’শ ডেসিবেল।
কিন্তু কেঁচে গেলো সব‌ই এতো কিছুর পর-
ল্যাং মারলো ভূত গুলোকে এখন বাজার দর।


প্রশ্ন

সূর্য ওঠে দিনের বেলা
রাত্রে কেন নয়,
বল্ দেখি মা, চাঁদের বেলা
উল্টো কেন হয় ?

মেঘ করলেই আঁধার করে
জল ঝরে ঝরঝর্-
তখন কেন বলিস্ মাগো
“আয় রে সোনা ঘর!”

শরৎ আসে, শিউলি হাসে-
হাসে কমল বন,
তখন কেন পুলক জাগে-
উথলে উঠে মন ?


কাঁদলে কেন দু গাল বেয়ে
গড়িয়ে আসে জল-
জানিস্ যদি মাগো আমায়
এক্ষুনি তুই বল।

 বিশ্বকবি

যেই দিকে চাই দেখতে যে পাই-
কেবল তোমার ছবি,
সকাল সাঁঝে মনের মাঝে-
তুমিই ‘বিশ্বকবি’।

প্রভাত রবি প্রথম ছবি-
সে তো তোমার আঁকা,
নীল গগনে ফুলের বনে-
তোমার চরণ রাখা।

তোমার হাসি বাজায় বাঁশি-
জ্বালায় কতো আলো,
পলাশ বনে আপন মনে-
কত‌ই যে রঙ ঢালো।

ছন্দে সুরে ভুবণ জুড়ে-
তোমার‌ই সুর বাজে,
তোমায় ছাড়া সবই হারা-
তাইতো সকল কাজে।

এক মায়ের‌ই


এক মায়ের‌ই দুই ছেলে ভাই-
হিন্দু মুসলমান,
বিভেদ তবে মিছেই কেন-
‘আল্লা-ভগবান’?

এক জলেতেই তৃষ্ণা মেটাই-
এক মাটিতেই বাস,
এক রঙের‌ই রক্ত সবার-
এক বাতাসেই শ্বাস !

সুখে যেমন সমান সুখী-
সবার হাসি মুখ,
দুঃখ ব্যথায় কেঁদে ওঠে-
তেমনি সবার বুক।

বিভেদ তবে র‌ইলো কোথায়-
কোথায় আপন-পর,
এক মায়ের‌ই দুই ছেলে ভাই-
করবো সুখে ঘর।

 পেটুক

হাঁদু বাবু পেটুক বড়ো
জালার মতো পেট-
বাড়ি মাথায় করেন,যদি
হয় “খাওয়ার‌ই লেট”।

সকাল হলেই প্রাতঃরাশে
চাই ছোলা আর গুড়,
মুড়িও খাবেন একধামা আর
সঙ্গে চানাচুর।

দুপুর বেলা খাবেন যখন
পাহাড় প্রমাণ ভাত-
আস্ত পাঁঠার মাংস টি চাই
তবেই নামে হাত।

রাতের সময় রুটি খাবেন
সেটাও ডজন দুই-
তারপরেতে ঢেঁকুর তুলে
বলেন “এবার শুই”।


এসেছে আশিন্

আকাশে ভাসছে মেঘের দল-
বাতাসে আগমনীর সুর,
কাশেরা করছে কোলাহল-
বেজেছে ঢ্যাম্ কুড়াকুড়্ কুড়।

মাঠেতে ভরা সবুজ ধান-
আঙিনায় শিউলিরা থৈ থৈ,
ঘাসেরা করছে শিশির স্নান-
মধুপে জুড়লো রে হৈ চৈ।

নদীতে ঢেউয়ের ঝলোমল্-
বাজে ওই আলোর বেনুর সুর,
দিঘিতে শাপলা শতদল-
নাচে তাই আনন্দে ভরপুর।

এসেছে আশিন্ ফিরে আজ-
মনেতে তাইতো খুশির দোল,
পড়ে থাক এবার সকল কাজ-
শোনা যায় পুজোর কলরোল।

 নেমন্তন্ন

নাচছে হাতি নাচছে ঘোড়া
আজকে খুকুর বিয়ে-
বর আসছে রাজপুত্তুর
টোপর মাথায় দিয়ে।

খোলা ব্যাঙে কাঁসর বাজায়-
ইঁদুর বাজায় ঢোল,
বিয়ে বাড়ির হাঁকে ডাকে-
বেজায় গন্ডগোল।

ভোজ বাড়িতে হরেক খাবার-
রাবড়ী মিহিদানা,
যার যতো চাই সব‌ই পাবে-
নেই তো মোটেই মানা।

নেমন্তন্ন র‌ইলো সবার-
আসবে তাড়াতাড়ি,
দেরি হলেই শুরু হবে-
দারুন কাড়াকাড়ি।

তখন কিন্তু বলো না ভাই-
“পাইনি খেতে” বলে,
খুকু সোনা রাগ করবে-
এমন কিছু হলে।

                                ★★★

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here