চিরঞ্জীব হালদার-র কবিতাগুচ্ছ

0
107
পরিচিতিঃ চিরঞ্জীব হালদার জন্ম – ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৬১ গাববেড়িয়া:দ২৪ পরগনা: পঃবঙ্গ।। প্রথম গ্ৰন্থ: ১৯৯৪  পুরস্কারঃ ‘বাহান্নটা টেক্কা ফিরে ফিরে ফিরে আসে’কাব্যগ্ৰন্থের জন্য কলকাতা পাবলিশার্স ও বুক শেলার্স গিল্ড কতৃক সেরা কবির সম্মান :২০০৬ প্রকাশিত গ্ৰন্থঃ ক. দু’পায়ের মূর্খ তুমি হাঁটতে শেখো ১৯৯৫ খ. বাহান্নটা টেক্কা ফিরে ফিরে আসে২০০৫ গ. গরলভাষ২০০৬ ঘ.চলো যাই চিড়িয়াখানা২০১০ ঙ.তরাজুপত্রে ভেসে যাও  বর্ণমালা২০১০ চ. আমি ঈশ্বর কে ডাউনলোড করেছি২০১৪ ছ. সহিস ও ঘোড়ার মধ্যবর্তী  যে নদী২০১৮ জ. আয় চাঁদ প্রেমিকার কপালে টি দিয়ে যা২০২০ ঝ.ছায়া সেলাই করা মানুষের ঠিকানা২০২০ ঞ.অবিদ্যাবিনোদিনীর পাঠশালা।। বাইফোকালিজম্-র পাতা সেজে উঠল আজ তাঁরই কিছু গুচ্ছ কবিতায়।

চিরঞ্জীব হালদার-র কবিতাগুচ্ছ

 

দিন

এমত ঢলে পড়ার আগে দিয়ে যেও দিন
প্যান্টের পকেটে মৃদু আতা বীজ তার
ঠিক ঠিক বাঁশি হয়ে ওঠেনি কখনো
ঠিক ঠিক সেই মুখ হাসি তার গহন গভীর
নাম ভুলে গেছি সে কেন দাঁড়াতো না পারা
অংকের সমাধানে তীক্ষ্ণ ঈর্ষা যদি কথা
অন্য খাতে গড়াতো কখনো ভুল ঘোরে
দিয়ে যেও দিন দোলা খোঁপা ভাসাতো চঞ্চল
জলছবি দিয়ে যেও শিলা বৃষ্টি খানিক
আমের যৌবনে খানিক এবড়ো থেবড়ো
দাগ দিয়ে যেও সারল্য সরবত যেভাবে
ঢাকা থাকে পথ ভুলে তোমার পাহাড়ে

এসো মুগ্ধ ঝাপসা কাজল রূপ আনতো অসীম
আপামর নিষিদ্ধ কথা স্তদ্ধ হয়ে থাক আজীবন

 

পাঠক

অপঠিত ঈর্ষা পাঠক
ভরা শীতে তুমি কার আতিথ্য নেবে

বাতাস জীর্ন হলে বায়ু কাকে ত্যাগ করে
বীজ থেকে খসে পড়া মৃত্তিকা চেতনা
তুমি তার মুগ্ধ ভাষ্য
গলিত কোঁচড়ে

নির্দায় যৌবন তুমি তার
ইরাবতী স্রোত

ঈর্ষা পাঠক
ঘোড়া বা উটের দেশে
চোখ বেঁধে পার হও
অপঠিত ঝর্ণাহরফ

জানা হয়নি ঝিঙে ফুল কখন তোমাকে
অভিবাদন করে

 

পশ্চিম

তুমি ভেবে নাও পশ্চিম দিক
ভেবে নাও আপেলের বসত

পূবে মাথা রাখলেন পশ্চিম
তেনার যাবতীয় কথাভুত

যোনিযন্ত্র প্রাচীরের গায়ে
হেলান দিয়ে মেপে নেয়
পঞ্চনদীর জলে কতটা লবন

ভালবাসা তুমি তাকে অভিবাদন করো
চূড়ান্ত নাড়ি কাটার পর বলে দাও
অভিবাদন এক অপরাজিত পুষ্প
মহাকাশ ভেদ করে উড়ে যাচ্ছে আমাদের প্রপিতামহ
সময়ের পোষাক পরে স্নানাগার
তোমার  অপেক্ষায়

ভেবে নাও তুমি মেধাবিধৈত অপহৃত পশ্চিম
কোন দিকে যাবে

 

অভিজ্ঞান

অনন্তর প্রেমিক ফুটেছে দিনের অভ্যন্তরে
আবাহনে নৈঃশব্দ কতটাই ঢেকে ছিল তোরে
ছুরির আড়ালে যত গাঢ়  নত্যকী বেভুল
অপেক্ষার অভ্যন্তরে নদীর প্রবাহিত মূল
অলঙ্কার খুলে নেয় ভুল পথ ধৃত অভিজ্ঞান
কাজলা হরিণটি তাকে নাভি খুলে দেন

 

অনুমান

আমার অনুগত জেব্রাটি নিরুদ্দেশ

অভিসন্ধি আর অনুমানের ঢালুপথে
হয়তো তার জেব্রানী কোন মোহময়ের চোরাটানে ঢলে আছে

তাকে উপদ্রবহীন দুপুরের কাছে তিন কুনকে ধান
ধার করাতে রাজি করাই
বহুদিন তার সাথে  নামহীন বাল্যকাল কে ঘুরতে দেখেছি

এখন দেখার সে কখন আলাদিন হয়ে ওঠে

 

আনজান

কাপড়ে চোপড়ে ধাঁধা লেগে যায়
কে আগে
অ-য় অসীম
আ-য় আমি
বলো আমি কাকে চাও মনুষ্যবিতানে

ডাকাতিনী বাঁশি বাঁকে আয় আয়
হরফ কাঁধে নিয়ে চলেছেন বিদ্যাসাগর
সাগরের জলে
জাদুকরী  খন্ড-ত ডুবোজাহাজে পাড়ি দেয়
অনন্ত শয়ানে
আহা জল কাপড় বয়ন করো তাঁতীনীর গর্ভে
গ-য় গর্ভ
গ-গন্ডুষ
কাকে তুমি জানিবে নিশ্চিত বরাহমিহির

আমাদের ভাগে কোন পরিচ্ছদ নেই
আমাদের ভাগে কোন গর্ভ নেই
শোধন সারস বলো বলো তৃষ্ণা পেলে
কত কুনকে করিবেক ঋণ

 

লিপ্সা

কবিতা আগে না কাম আগে
যথেচ্ছ লিপ্সা ফুটে আছে জিরাফ বাগানে
বাগান কি পুরুষ
যদি নারী হয় আসন্ন পল্লবিত খেজুরের ডাল হেসে ওঠে
আসলে কোথাও কোন সরাইখানা নেই
সঙ্গতে রয়েছে এক মৌন প্রজাপতি
সেও চায় মিলন প্রকল্প

কিবা কাম
কবিতার অনুসঙ্গে গার্গীর দোপাট্টা থেকে
জন্ম নেয় কতিপয় আজানুলম্বিত শাবক চেতনা
প্রশ্ন করে জলকন্যা কি রত ছিল অরুনি সঙ্গমে

কাম আঁকো কচ আঁকো
কবিতাও আঁকা হোক হৃদয় মাঝারে

 

নিষিদ্ধ

উরু সৌকর্য থেকে একদিন নেমে আসবে চতুর হরিণী
টোপলা নাসিকার হিরিম্বা পথে একদিন
বনভূমির জন্মান্তর হবে।
যে যুবা দেখেছে মোনালিসা কুন্তল তার গথিক
রামধনু ল্যাঙ্কাশায়ারের পথে খুঁজে নেবে
মরুজিন নদীর গোপন শিৎকার

ওই দেখো উড়ে যায় টোটেম কুমারী
পাখিদের মহোৎসবে ছিন্ন খঞ্জনা

 

হলফনামা

এখনো পর্যন্ত গনহত্যার কথা বলিনি
আমার লুকানো জেব্বায় কয়েক’শ টর্পেডো

শীতঘুমে

নীল নক্সার সরীসৃপ
আমার নাম আর রতিকথন ফিরিয়ে দাও
ফিরিয়ে দাও সাঁওতাল বালিকার রসিক সাইকেল

এখন ও পর্যন্ত বলিনি সম্রাটের গোপন কক্ষের পরিখায় সন্তরন পটু নারীদের হলফনামা
হে বালিকাবধূ ট্রাম তুমিও কি সারিসারি দেহ মাড়িয়ে
গুমটির ভৌতিক কুচকাওয়াজের বিনিময়
সেরে নেবে

না আমি কোন গনহত্যার শব নই যে মিথ্যে বলবো

 

অজ্ঞাত

কানা বুলবুলি ও বিদূষক
দুজনেই আমার বন্ধু
দুজনেই আমার বান্ধবী
না রাখি কুল না রাখি মান
গত বর্ষায় ভেসে গেছে অভিমানী শ্বশুরকুল
আমার যামিনী মগ্নতার পাশাপাশি হেঁটে যায়
বৃহদারন্যক নেউল

উভয়ে স্বর্নিবন্ধ বাঁধা থাকে
চারণভূমি থেকে উঠে আসা বাস্তুদাড়াঁস
অমিথ্যে প্রণয়ও সারে এই নৈঃশব্দের কোলাহলে

দুজনেই আমার বান্ধবী
সময় তার নিয়ন্ত্রণহীণ যৌনতা দিয়ে গেঁথে নেয়
গুঞ্জাফুল
আমরা ক্রমাগত বালিকা ও নাদান বালক
শুধু বিদূষকই জানে আমরা কেহ কারও রেচন
জানিনা

 

খন্ড-ত

শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে চলে আসুন চমৎকার সিঁড়ি
মাতলামি লঙ্ঘন করে চলে আসুন চমৎকার সার্কাস
ঘ্যাম দেখতে বেসামাল বিবিদের নিষিদ্ধ লিপ্সা লঙ্ঘন করে চলে আসুন চমৎকার ভিনি ভিডি ভিসি
আমাদের  পাঁজর ফাটানো জল তেষ্টা পেলে দোষ দিও না বাপু

আমরা সত্যি অলঙ্ঘনীয়
হিসির আগে সেরে ফেলতে হবে যা কিছু সৎকর্ম

ধর্মপুস্তক এর সমানুপাতিক ভাবাবেগ লঙ্ঘন করে
ঢুকে যাওয়া বৈদিক ভিলেজ এর টানটান নিষিদ্ধ খোপে
পুরানো পোশাক থেকে যত খারাপ গন্ধ নির্গত হোক না কেন এই উপত্যাকায় আমরাই প্রকৃত পেশাদার
আমাদের নিরুদ্দেশ রিজিউম এর মিথ্যে আত্ম প্রশস্তি গুলো চিকন ভ্রমরদের থেকে বের করে আনবে চমৎকার গোধূলি
এসো আমাদের অতিরিক্ত অ্যনেক্সচারের পাতায়
লীন হয়ে যাওয়া ডুবোজাহাজীর মনবাসনা গুলো
হেসে ওঠে ভনিতার ভোরের আকাশে
এসো এসো ভূট্টাগাছ প্রৌঢ় কেন অঘোর বসাকের
একমাএ কামনার চমৎকার সহচর

আমার অনুগত জেব্রাটি নিরুদ্দেশ

অভিসন্ধি আর অনুমানের ঢালুপথে
হয়তো তার জেব্রানী কোন মোহময়ের চোরাটানে ঢলে আছে

তাকে উপদ্রবহীন দুপুরের কাছে তিন কুনকে ধান
ধার করাতে রাজি করাই
বহুদিন তার সাথে  নামহীন বাল্যকাল কে ঘুরতে দেখেছি

এখন দেখার সে কখন আলাদিন হয়ে ওঠে

লেখা পাঠাতে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here