অন্য গদ্য ও একটি নান্দনিক ভাবনা

1
149

 

অলক জানা মূলত কবিতা চর্চাই করে থাকেন, তবে তাঁর গদ্য শৈলির নান্দনিকতা পাঠকদের আপ্লুত করে তোলার মতই।আজ বাইফোকালিজমের পাতা জুড়ে অলক জানার একটি গদ্য।পাঠকদের মতামত ও সৃজনে যদি সহায়ক হয় তবে আমাদের প্রয়াস স্বার্থক।

আলম্ব ও একটি পরিক্রমা

অ ল ক   জা না

এখন রবীন্দ্রনাথের কথা খুব বেশি মনে পড়ে। প্রায় প্রতিদিনই। দিনরাত্রির যে কোন সময়। সব অক্ষরকর্মী আমার ভাবনায় রবিঠাকুরের অংশ। যেমন প্রতিটি স্ফুলিঙ্গ হলো সূর্যকণা অথবা নারীপুরুষ মাত্রেই আদম ইভের উত্তরাধিকার। সূর্যপৃষ্ঠে অনেক জ্বালানি তাই আগুন জাগারুক। পৃথিবীতে হৃদয় ছাড়া আর কোন অনির্বাণ জ্বালানি আছে কিনা এ বিষয়ে আমার তীব্র সন্দেহ।

পরিক্রমার পথ যাই হোক না কেন একটি নির্দিষ্ট
আলম্বের টানেই এই প্রক্রিয়া নিরন্তর চলে।
চোখে মোটা লেন্সের চশমাটা লেগেই গেলো। প্রথম প্রেমের গোপনীতার ব্যর্থ চেষ্টার আদলে একটি দুটি পাকাচুল, দলভারী করতেই এখন ব্যস্ত। দিনরাতে কয়েটি সিগারেট আর একপক্ষ কাল শেষে মদ্যপান।

বউ মরে যাওয়ার পর অনেকটা ঝাড়া হাত-পা, সামান্য কিছু চিন্তা কেবল আয়বুড়ো ছেলেটার জন্য। তাপসদার সঙ্গে সময় কাটানোর অজুহাতে আততায়ী ঠোঁটের আদরে পুড়ে যায় কলেজ বিড়ি। নগ্নছবির চাট অনুষঙ্গে দু-এক পেগ। প্রথম ছাপা কবিতার নিদারুণ শিহরণ এখন ছায়া অতীত। হয়তো আমাদের ঢিলেঢালা আলম্বের অনুশাসনে বিক্ষিপ্ত ছন্দলয়ে হাঁটছি যে যার মতো।

আমরণ কিছু ব্যক্তিগত বিকার সে তো থাকবেই। পটি হিসু কিংবা বাতকর্মের জৈবিক প্রক্রিয়ার ঘ্রাণফল। এইসব সহজাত সহ্যগুণ সবাই উপভোগ করে। এভাবেই জীবন এভাবেই জীবনের সারস্বত বিচ্ছুরণ। তুমি আমি আমরা নক্ষত্র হই আবার ভাঙা আয়না দুষ্ট গ্রহের তকমা ধরে থাকি। হাওয়া কাঁপিয়ে একটি মিছিল চলে গেল। সুযোগ বাগে আনতে দল বদল করলো এই মফস্বলের জনাকুড়ি ভোটার, প্রেমিকার মতো।

তখন এদের কাছে দল, দলের ধর্ম আদর্শ কৃচ্ছ্রসাধন কোনো ব্যাপারই না। সবই সময়োচিত দাবির দাস ! উড়ুক্কু ঘুড়ি সানন্দেই আকাশের নীলে ডুবসাঁতার। পুরানের রাইকালা আর বাঁশপাতা গ্রামের ক্রমা শ্রীকেশ না জানি একাকার হয়ে যায়।হাতে লাটাই, ডাকলেই ফিরে আসে নাগালে। আলম্ব ও যাত্রী উভয়ই মশগুল। সুতো ছিঁড়ে গেলে ! ভাগ্যবিপর্যয়। ট্রাফিকহীন চৌরাস্তার অ্যাবস্ট্রাক্ট কোমা-পূর্ণচ্ছেদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here