ম না মী ঘো ষ-র কবিতাগুচ্ছ

3
118
পরিচিতিঃ মনামী ঘোষ। পেশায় শিক্ষক। নেশায় সংস্কৃতি কর্মী এবং ভালবাসা লেখা।আজ বাইফোকালিজম্-র পাতা জুড়ে তারই কিছু কবিতাগুচ্ছ। 

ম না মী ঘো ষর কবিতাগুচ্ছ

বিশাখা পদাবলী(পাঁচ)

শ্যামক নাম না কর গোরি
গেও পরবাসে তোঁয়ারে বিসরি।।
পিরীতি সায়রে সবহুঁ ডুবল
মধুর স্বপন সগরি টুঁটল ।।
মঝুবাত রাই ন বিশোয়াসে
কুঞ্জে যাওল দরশন আশে ।।
না হেরই শ্যাম হেন বুঝি চিতে
ছুপায়ল শ্যাম রাইকো যাচতে।।
কৃষ্ণবরণ মেহ গগনে
একদিঠ করি রাই নিরিখনে ।।
হাসত বয়ানে কহত রাই
হিয়ার মাঝারে রাখলুঁ মাধাই ।।
কহে বিশাখা কর অবধান
তোঁয় লাগি সখি বহরাওব কান।।

একুশে


ভাষা আমার সাদা পাতায়
মনের খুনসুটি
ভাষা আমার বাউল গানে
ঘরের বাঁধন টুটি
বাংলা আমার পথেঘাটে
সহজিয়া কথা
কীর্তন বা ভাটিয়ালি
বাংলা কথকতা
হোকনা বিভেদ তারকাঁটাতে
এদেশে ওদেশে
বাংলা ভাষায় প্রাণে মনে
দুপার এসে মেশে
একুশ আমার অহংকারে
একুশ ভালোবাসায়
বুকের মাঝে রক্তনদী
এপার ওপার ভাসায়।

 

মেঘ-বিরহ

ক্ষ্যাপা শ্রাবণ
বর্ষাযাপন
উথালপাতাল।
নিম্নচাপে
মনস্তাপে
মেঘলা আঁধার।
টাপুর-টুপুর
একলা দুপুর
প্রতীক্ষাতে।
অঝোর ধারায়
পেখম ছড়ায়
ময়ূর নাচে।
কোন সুদূরে
যক্ষপুরে
নির্বাসিত,
উদাস দিঠি
পাঠায় চিঠি
মেঘের হাতে।
হাল আমলে
চ্যাটে কলে
উধাও ব্যথা।
খামখেয়ালী
দূতিয়ালি
চায়না হিরো।
লং-ড্রাইভে
আদম ইভে
বৃষ্টি বাধা।
দেখবে আকাশ
নেই অবকাশ
ব্যাস্ত জীবন।
কদম ঘ্রানে
প্রেমিক প্রাণে
হঠাৎ জোয়ার,
পূর্বমেঘে
কোন আবেগে
বানভাসি মন।
আধুনিকার
আইলাইনার
চোখের পাতা,
ভিজে গেলো
বৃষ্টি এলো
অন্তরেতে,
বাদল বাতাস
প্রেমের সুবাস
চিরন্তনী।

বিজয়ী


আর কখানা যুদ্ধ আছে বাকি
আর কতবার হারতে হবে বলো!
জিততে জিততে বাড়ছে জয়ের নেশা
তবু তোমার আসন টলোমলো।

তোমার জন্য সূর্য হাসে যদি
ওমনি ছায়া খোঁজ হন্যে হয়ে
আকাশ ভেঙে বৃষ্টি যখন নামে
ত্রস্ত তুমি ছাতার আশ্রয়ে।

সুখ কিনেছো সুখ পেয়েছো যত
ততই বাড়ে সব হারানোর ভয়
পরাজিত করলে যতবারই
ততবার কি পেয়েছো বিজয়?

ভোঁতা আমার তরবারি নিয়ে
যোগ দিয়েছি যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায়
নাহয় তুমি অর্জনই ভাবলে!
জয় চেয়েছো!তাই দিয়েছি হেলায়।

 

(গার্সিয়া লোরকা অবলম্বনে)
ঘোড়সওয়ারীর গান


করডোবা
যোজন দূর
বড়ো একা
হৃদয়পুর।
পূর্ণচাঁদ,
কৃষ্ণকায়
অশ্ব- জিনে
অলিভ ছায়।
করডোবা
চেনাপথে
পৌঁছোবনা
কোনমতে।
পাকদণ্ডী
বাতাস চিড়ে
কালো ঘোড়ায়
সফর ঘিরে-
গ্রহণলাগে
লালচে চাঁদ,
করডোবা
মরণফাঁদ।
দুঃসাহসী
অশ্বখানি,
পথের শেষ
নাইবা জানি।
করডোবা
পথের আগে
অপেক্ষাতে
মরণজাগে।
করডোবা
যোজন দূর
বড়ো একা
হৃদয়পুর।

 

কথার কথা

কথা নেই? কথারা?
নেই রূপকথারা
নীরবতা বেশ তো!
কোলাহল শেষ তো।
খিল দেওয়া দরজায়
কত কথা কবিতায়
শব্দেরা নিশ্চুপ
ভিজে যায় চুপচুপ
না বলাও কিছু থাক
হৃদি ডুবে যায় যাক,
বাকি পথ আঁকাবাঁকা
গাঢ় ছায়া মেঘে ঢাকা।
পালকের ওম মেখে
আবডালে রেখেঢেকে
কিছু কথা অগোছালো
কিনারায় থমকালো
সেকথারা আনমন
ছুঁয়ে থাকে প্রতিক্ষণ।

লেখা পাঠাতে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here